মেহেন্দিগঞ্জ প্রতিনিধি: বিষয়টা রাজনীতিবিদদের জন্য বেদনাদায়ক হলেও চরম সত্যি যে, যারা আওয়ামী লীগের দূর্দীনে আওয়ামী লীগের সভাপতি বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে নানা ভাবে হেনস্থা করেছে তারাই এখন আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতাকর্মী হচ্ছেন।
এটা ভোক্তভোগী বিশেষ করে পরিবার-পরিজন কিংবা নতুন প্রজন্মের কাছে অত্যান্ত সুককর। বাংলাদেশের রাজনীতি এখন রূপ নিচ্ছে অর্থনীতিতে। তাই স্বাবাবিক ভাবে দেশের আইনের পরিবর্তনে দলের উর্ধ্বতন নেতাকর্মীদের স্বার্থ ক্ষুন্ন হলে তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠবেই৷
এখানে অনেকেই ব্যক্তিগত এবং সম্পদ নিয়ে সচল থাকলেও রাজনীতিকে তারা ব্যবসায় পরিনত করেছেন৷ অনেক রাজনীতিবিদ পরিবারের অর্থ, ব্যবসায়ী পার্টনারের অর্থ লুট-পাট চালানোর ঘটনা দিন-দিন বেড়েই চলছে, কারণ এখনকার সময়ে বিয়েটা যেমন ব্যয়-বহুল তেমনি বাংলাদেশের রাজনীতিও সমান তালে চলছে৷
বর্তমানে রাজনীতিবিদরা পরস্পরের রাজনৈতিক আনুগত্যের প্রতি স্বীকার করে জন্মদিন ও মৃত্যুবার্ষিকীতে কেক এবং প্রত্যাবর্তনের এয়ারপোর্টে নেতাদের একত্রিত করে যাতায়াত এবং ফুল ক্রয়সহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন বাবত পোষ্টার, ফেসটুন,লিফলেট-বিরিয়ানী,পত্রিকায় বিজ্ঞাপন,হল বাড়া ইত্যাদি খরচ দিন দিন বাড়িয়েই চলছেন। আর তার বদোলতে নানা ভাবে সম্মান ক্ষুন্ন হচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিচক্ষন্তার সহিত এতটা কঠোর অবস্থান নেওয়ার পরেও থেমে নেই অনুপ্রবেশ। নানা রকম হুশিয়ারি, নিষেধাঙ্গা, ঘোষনা দেওয়ার পরেও কিছু দলীয় নেতার অপশক্তিতে অর্থের বিনিময়ে অনুপ্রবেশকারীরা ঠিকই দলে যোগদান করে দলীয় ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করেই চলেছে।
আজ আপনাদের সামনে তুলে ধরছি তেমনই কিছু নেতার নাম, যারা ১৯৯১ সালে জামাত বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পরদিনই শেখ হাসিনার ছবি কুকুরের গলায় ঝুলিয়ে সম্মানহানী করেছে এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিসংবলিত ব্যানার দিয়ে মূর্তি বানিয়ে স্থানীয় কালিতলা বাজারে অগ্নি সংযোগ করেছিলো তৎকালীন ছাত্রদলের সভাপতি জসিম মাঝি ওরফে বোমা জসিম ও সম্পাদক বিপ্লব তালুকদার এবং কবির মাঝিসহ তাদের সাঙ্গপাঙ্গ। তৎকালিন গোবিন্দপুর আওয়ামী লীগের সভাপতি মশিউর রহমান বিপ্লব তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন মাঝি, সহ-সভাপতি বেনু সরকার, অমল হরি ঘোষ, বাবুল সিং, মরহুম আলতাব সরদার, শুভাষ ঘোষসহ গোবিন্দপুর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঘটনার প্রতিবাদ করতে এলে তাদের মারপিট করে হতাহতের ঘটনা ঘটায়।
সে ঘটনায় ভোক্তভোগিরা লিখিত আকারে অভিযোগ দায়ের করলেও স্থানীয় বিএনপি জামাত নেতাদের ক্ষমতার দৌড়াত্তে কোন ব্যবস্থাই গ্রহণ করেনি স্থানীয় মেহেন্দিগঞ্জ প্রশাসন। পরমুহুর্ত্বে পঙ্কজ দেবনাথ, আওয়ামীলীগের সভানেত্রী এবং বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদককে অবগত করলে সভানেত্রী এবং জেলা পর্যায় থেকে একাধিকবার তদন্তের দাবী জানানো হলেও বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকার কারনে তারেক জিয়ার দাপটে দোষীদের বিরুদ্ধে কোন মামলা নেয়নি মেহেন্দিগঞ্জ থানার দায়িত্বরত অফিসার।
অথচ আজ আওয়ামী লীগ দলের সুদিনে তারাই ত্যাগী নেতার পরিচয় দিয়ে উপর মহলে তদবীরের মাধ্যমে হয়েছেন আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতা। এ বিষয়ে প্রকৃত ত্যাগী আওয়ামী লীগের কেউ মুখ খুললেই হতে হয় নানা ভাবে অপমান অপদস্থ। এলাকায় তাদের প্রভাবে কেউ আর মুখ খুলতে সাহস পায়না। যার ফলশ্রুতিতে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে অবাধে করে চলেছেন নানা ধরনের অপরাধ অপকর্ম।
এ বিষয়ে বরিশাল-৪ আসনের এমপি পঙ্কজ নাথ জানান, আওয়ামীলীগ সরকার দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার পরেও তৎকালীন ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত বা আইনি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি মেহেন্দিগঞ্জ তথা বরিশাল প্রশাসন। ওই সময় আমি শত চেষ্টা করার পরেও কোন ব্যবস্থা নেওয়াতে পারিনি। তবে এখন আমি ব্যক্তিগত ভাবে সেই সকল দোষীদের প্রমানাদী সংগ্রহ করতেছি। খুব শীঘ্রই আইনি সহায়তা নেওয়ার ব্যবস্থা করবো।
তিনি আরো জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা কামাল মাষ্টারের মেয়েকে উঠিয়ে নিয়ে ধর্ষণ করার অভিযোগও জানা গিয়েছে। ওই সময় মাষ্টার বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছিলেন বলেও খবর পাওয়া যায়। আমি সে মামলার নথিপত্রও সংগ্রহ করার চেষ্টা করতেছি। খুব শীঘ্রই সকল কাগজপত্র হাতে পেয়ে উচ্চ আদালতে হাজির হবো এবং সেই জামাত বিএনপির দোষরদের বিচারের আওতায় আনবো।